অনুপ্রবেশকারীদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে যদি প্রকৃত বাংলাদেশি কেউ থাকেন, তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় নাগরিক কিংবা দেশটির রোহিঙ্গারা থাকলে, তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে।
আজ শনিবার (১৭ মে) সাতক্ষীরার সুন্দরবনের বয়েসিং খালে বিজিবির তৃতীয় ভাসমান বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট (বিওপি) উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের কাছে কূটনৈতিকভাবে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি, যেন পুশইনের পরিবর্তে যথাযথ প্রক্রিয়ায় কাজ হয়। তবে পুশব্যাকের চিন্তা আমাদের নেই।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সীমান্তে কার্যকর জলভিত্তিক নজরদারি নিশ্চিত করতে বিজিবি’র অধীনে একটি বিশেষ ‘রিভারাইন বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন’ গঠনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যা ভবিষ্যতে সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। সরকার মনে করে, ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ শুধুমাত্র একটি স্থাপনা নয়, এটি একটি কৌশলগত নিরাপত্তা উদ্যোগ, যা সীমান্ত এলাকায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ। এটি দেশের সীমান্তে ব্যবস্থাপনায় একটি আধুনিক ও কার্যকর নিরাপত্তা সংস্কৃতি গঠনের পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, পুশইনের মাধ্যমে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের প্রবেশের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখছি।
বিজিবি জানায়, বাংলাদেশের ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ১৮০ কিলোমিটার নদীঘেরা, যার ৭৯ কিলোমিটার সুন্দরবনের অরণ্যে। বয়েসিং খালে স্থাপিত নতুন ভাসমান বিওপি হবে কৈখালী ও কাঁচিকাটা বিওপির মাঝামাঝি ৩০ কিলোমিটার এলাকায় সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে।
এই বিওপিতে দুইজন অফিসারের নেতৃত্বে ৩৫ জন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে নারী ও শিশু পাচার, মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষা।
অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, শ্যামনগরের ইউএনও মোছা. রনী খাতুনসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এস এম জিন্নাহ, সাতক্ষীরা