শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের লুণ্ঠনের ১৫ বছর পর জাতি পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য দেশের পোশাক প্রস্তুতকারকদেরকে প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার উত্তরাধিকার সূত্রে একটি ভগ্ন অর্থনীতি পেয়েছে এবং তারা এখন দেশকে ঠিক করার এবং একে প্রবৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার কঠিন কাজের সম্মুখীন।’

গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতাদের উদ্দেশে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে গেছে। আমরা একটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়েছি। তারা আমাদেরকে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলে গেছে। কিন্তু, সবার সহযোগিতায় আমরা দেশকে পুনর্গঠন করতে পারব।’

বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বিজিএমইএ সহসভাপতি ও পরিচালকসহ পোশাক শিল্পোদ্যোক্তাদের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বলেন, ‘দেশ ব্যর্থ হতে পারে না। হলে এর প্রভাব হবে বিপর্যয়কর। জাতির অস্তিত্বই সংকটের সম্মুখীন হতে পারে।’

পোশাক প্রস্তুতকারকদের তাদের ব্যবসাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে, আপনারা ব্যবসাকে রাজনীতির সঙ্গে মেশাবেন না।’

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার ১৫ বছরের নৃশংস স্বৈরাচারের পতন ঘটানো ছাত্র বিপ্লব মানব ইতিহাসে নজিরবিহীন। তারা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। তারা যখন আমাকে ফোন করে দেশের নেতৃত্ব হাতে নেওয়ার অনুরোধ করে, তখন আমি বিদেশে ছিলাম।’

বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তারা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বকে পূর্ণ সমর্থন করেন। তারা এ খাতের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানান। তারা বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের সহায়তা কামনা করেন।

ব্যবসায়ী নেতারা শিথিল ঋণ পরিশোধ এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধসহ কয়েকটি দাবি উপস্থাপন করেন। অধ্যাপক ইউনূস ধৈর্যসহ তাদের কথা শোনেন এবং তাদের দাবিগুলো বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করব। বাংলাদেশের জনগণের অসীম প্রতিভা রয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। আমরা চাই এটি আরও প্রসার লাভ করুক।’