ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ায় বিক্ষোভ
৪৪তম বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসার গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না নেওয়ায় ফুটবল খেলা থেকে বাদ পড়েছে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে আজ শনিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রধান শিক্ষক মো. আকরাম হোসেন ও ক্রীড়া শিক্ষক মো. আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ তুলে অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ করে। পাঠদান বর্জন করে বিদ্যালয় মাঠে অবস্থান নিয়ে শিক্ষকদের অবরুদ্ধও করে রাখে ছাত্ররা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় মানিকগঞ্জ শহরের শহীদ তপন-মিরাজ স্টেডিয়ামে সিঙ্গাইর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল খেলা নির্ধারিত ছিল। নিয়ম অনুযায়ী খেলার জন্য সিঙ্গাইর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের ছবি ও সনদপত্র সঙ্গে নেওয়া হয়। কিন্তু খেলা শুরুর আগে স্টেডিয়ামের ভেতর আয়োজকরা অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেখতে চান। রেজিস্ট্রেশন কার্ড না থাকায় ফুটবল খেলা থেকে তাদের বিদ্যালয়কে বাদ দেন আয়োজকরা।
এ ঘটনায় ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের পাঠদান বর্জন করে মাঠে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। তারা প্রধান শিক্ষক মো. আকরাম হোসেন ও ক্রীড়া শিক্ষক মো. আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবিতে নানা ধরনের স্লোগান দেয় ছাত্ররা। এ সময় বিদ্যালয়ের পেছনের জানালার থাই গ্লাস ভাঙচুর করা হয়।
অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় ওই দুই শিক্ষক বিদ্যালয় থেকে সরে থাকেন। অন্য শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বিদ্যালয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। পরে দুপুর ১টার দিকে ইউএনও শেখ জাহিদুল ইসলাম গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা জানায়, শিক্ষকরা আগেই থেকে জানালে রেজিস্ট্রেশন কার্ড সঙ্গে নিত ছাত্ররা। শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির কারণে ফুটবল খেলা থেকে বাদ পড়ে তাদের ফিরে আসতে হয়েছে। এই কারণে ওই দুই শিক্ষকের অপসারণ দাবি করে তারা।
সিঙ্গাইর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আকরাম হোসেন জানান, খেলায় অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের রেজিস্ট্রেশন কার্ডের বিষয়টি ক্রীড়া কমিটি জানায়নি। এ কারণে তা নেওয়া হয়নি। আগের বছরে খেলায় অংশ নিতে যেসব কাগজপত্র লেগেছিল এবারও সেগুলোই নেওয়া হয়েছিল। এখন বাদ পড়ায় ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ইউএনও শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক ও ক্রীড়া শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে তিনি বিদ্যালয়ে গিয়ে জরুরি সভা করেন। সেখানে অন্য শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ছাত্ররা শান্ত হয়ে পাঠদানে অংশ নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

আহমেদ সাব্বির সোহেল, মানিকগঞ্জ