জঙ্গি রিপনকে তওবা পড়ানো হয়েছে
সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনকে তওবা পড়িয়েছেন ইমাম।
আজ বুধবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে কারাফটকে এনটিভি অনলাইনকে জানান সিলেটের আবু তুরাব জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা বেলাল উদ্দিন। তিনি জঙ্গি রিপনকে তওবা পড়িয়েছেন।
বেলাল উদ্দিন বলেন, “জঙ্গি রিপন আমাকে বলেন, ‘আমার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমাকে জান্নাতবাসী করেন।’ তওবা পড়ানোর সময় রিপনের মধ্যে কোনো ভয়ের লক্ষণ ছিল না। ওই কথা বলার পর থেকেই রিপন নীরব ছিলেন।”
রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করে কারাগারে।
এর আগে রাত ৯টা ১৫ মিনিটে সিলেট জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাহাত আনোয়ার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সাফায়াত মো. শাহেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার (এসপি) মনিরুল ইসলাম ও কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) মো. ফয়জুল হক সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া এই তথ্য জানান।
এর আগে সিনিয়র জেল সুপার জানান, রিপনের ফাঁসি আজ রাতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করা হবে। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জল্লাদ মো. ফারুকের নেতৃত্বে ১০ জন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে কারাগার ও এর আশপাশের নিরাপত্তা।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল উদ্দিন। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া। এ ঘটনায় আহত হন আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন।
এই মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রায়ে হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নান, সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এই রায় আপিলেও বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাঁদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। এরপর প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া অপর দুই জঙ্গি হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি আবদুল হান্নান ও তাঁর সহযোগী সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দি আছেন।

মারুফ আহমেদ, সিলেট