স্বর্ণালংকারের লোভে দুই শিশুকে হত্যা!
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ফতেপুরের দুই শিশু সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও মেহজাবিন আক্তার মালিহাকে স্বর্ণালংকারের লোভে হত্যা করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফতেপুরের ভ্যানচালক ইয়াসিন আলীর বাড়ির খাটের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মেঘলা ও মালিহার লাশ উদ্ধারের পর আটক ইয়াসিন আলী, তাঁর স্ত্রী তানজিলা খাতুন ও পুত্রবধূ লাকি বেগম পুলিশের কাছে প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে এমন তথ্য দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানান, নিখোঁজ ওই দুই শিশুর কাছে সোনার দুল ও মালা ছিল। ওই স্বর্ণালংকারের লোভেই লাকি দুই শিশুকে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাকির ঘর থেকেই পুলিশ ওই শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে, পুলিশ দুপুরে লাকিসহ তিনজনকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠায়। নিহত মালিহার বাবা আবদুল মালেকের করা মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়ার পর গণমাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
অন্যদিকে, চাঞ্চল্যকর দুই শিশু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফতেপুর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিবারে চলছে মাতম।

পুলিশ জানায়, মেঘলা ও মালিহা গত রোববার দুপুরে স্কুল থেকে ফেরার পর বাড়ির বাইরে খেলা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাদের না পাওয়া গেলে বিষয়টি ওই দিনই পুলিশে জানানো হয়। ওই রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয় গীতা রানী নামের এক নারীকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, আটক গীতা রানীর অসংলগ্ন কথাবার্তায় পুলিশ তাঁর দেওয়া তথ্যানুযায়ী কয়েকটি স্থানে অভিযানও চালায়। তবে শিশুদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরই মাঝে মঙ্গলবার স্থানীয় জনগণ ফতেপুরের বাড়ি বাড়ি তল্লাশির উদ্যোগ নেয়। সন্ধ্যায় ইয়াসিন আলীর বাড়ির খাটের নিচে বস্তাবন্দি অবস্থায় দুই শিশুর লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং বাড়ির মালিক ইয়াসিন আলী, তাঁর স্ত্রী তানজিলা খাতুন (৫০) ও পুত্রবধূ লাকি বেগমকে (২২) আটক করে।
নিহত দুই শিশু হলো ফতেপুর গ্রামের মিলন রানার মেয়ে সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও আবদুল মালেকের মেয়ে মেহজাবিন আক্তার মালিহা।

শহীদুল হুদা অলক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ