শাহনাজ রহমতুল্লাহর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ। ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, যে ছিল হৃদয়ের আঙিনায়, সে হারাল কোথায় কোন দূর অজানায়’ গানটির কথার মতোই এক বছর আগে দৃষ্টির সীমানা ছেড়ে চলে গেছেন তিনি।
গত বছর ২৩ মার্চ দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বারিধারার বাসায় হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৬৭ বছর বয়সে তিনি মারা যান। রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
১৯৫৩ সালের ২ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। মায়ের হাতেই ছোটবেলায় শাহনাজের গানের হাতেখড়ি। মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেন। সেই থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নিয়মিত গান করেছেন। টেলিভিশনে গাইতে শুরু করেন ১৯৬৪ সাল থেকে। দেশের গান যেমন তাঁর কণ্ঠে জনপ্রিয় হয়েছে, তেমনি চলচ্চিত্রের গানও।
শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠে মানুষ শুনে এসেছেন কালজয়ী গান ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘আমার দেশের মাটির গন্ধে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে আমায় বল’, ‘সাগরের তীর থেকে’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘খোলা জানালা’, ‘পারি না ভুলে যেতে’, ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে’সহ আরো অসংখ্য গান।
‘ছুটির ফাঁদে’ চলচ্চিত্রে গাওয়া ‘সাগরের সৈকতে কে যেন দূর থেকে’ গানটির জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। পরবর্তী সময়ে ‘ঘুড্ডি’ সিনেমাতে গান গাওয়ার জন্য তিনি দ্বিতীয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।
বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া চারটি গান স্থান পায়। শাহনাজ রহমতুল্লাহ প্রখ্যাত গজলশিল্পী মেহেদী হাসানের কাছে গজল শিখেছেন। সত্তরের দশকে অনেক উর্দু গীত ও গজল গেয়েছেন।
১৯৭৩ সালে শাহনাজ রহমতুল্লাহ আবুল বাশার রহমতুল্লার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের এক মেয়ে নাহিদ রহমতুল্লাহ ও এক ছেলে এ কে এম সায়েফ রহমতুল্লাহ।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও সংগীতে অবদানের জন্য শাহনাজ রহমতুল্লাহ একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, জাপান-বাংলাদেশ কালচারাল ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, বাচসাস পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

বিনোদন প্রতিবেদক